সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
বহু প্রতিভার অধিকারী কাউন্সিলরদের মধ্যে এক কাউন্সিলর অপর কাউন্সিলরকে মেরে ভ্যাবচ্যাকা বানিয়ে দিলেন। সেই সাথে সন্ত্রাসীদের নিয়ে মহড়া দিতে থাকেন কাউন্সিলরগন। শহরের প্রতিটি মানুষের মুখে রয়েছে এ ঘটনা। আলোচনা চলছে সমাজের যারা প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের নিয়ে।
প্রশ্ন আসছে কাদের করা হয়েছে জনপ্রতিনিধি। তাদের পেছনের ইতিহাস কী? এমন ঘটনায় আইনগত কোন ব্যবস্থা না নিয়েই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি উভয় কাউন্সিলরকে হাতে হাতে মিলিয়ে দিয়েছেন।
জানা গেছে, শ্বশুরবাড়ির ঘটনার জের ধরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) ভবনে কাউন্সিলদের মাসিক সভায় ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান বাবুলকে মারধর ও অস্ত্র প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে মাসিক সভায় অনুপুস্থিত ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুর বিরুদ্ধে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ তুলেছেন মারামারিতে জড়ানো দুই কাউন্সিলর। মাসিক সভা শেষে কাউন্সিলরা বের হতে শুরু করলে কাউন্সিলর বাবুর উপস্থিতিতে গেটের বাইরে থেকে একদল যুবক নাসিক ভবনে ঢুকে সাংবাদিকের সাথে ধস্তাধস্তি করে মোবাইল কেড়ে নেয়।
নাসিক ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান বাবুল বলেন, মজিবুর মেম্বার ফারুকের শ্বশুর । কুঁড়িপাড়া চৌরাস্তা আমিনা মসজিদের পাশের রাস্তা ঢালাই দিয়ে বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে যাতে কোন গাড়ি ঢুকতে না পারে। গাড়ি ঢুকলে রাস্তা ভেঙ্গে গেলে কন্ট্রাকটারের ক্ষতি হবে। বিশ দিন পর বাঁশ খুলে দিবো। কিন্তু তিনদিনের মাথায় মজিবুর বাঁশ খুলে গাড়ি ঢুকাইছে শুনছি। পরের দিন সকাল বেলা আমি ইটের গাড়ি আটকে দেই। সেই গাড়ির ভিতরে মজিবুর ছিলেন । ফারুকের শুশ্বর মজিবুর ইটের ব্যবসা করে। তখন আমি ইটের গাড়ির ড্রাইভার ও হেলপারের সাথে রাগারাগি করি তখন মজিবুরের সাথেও চেতাচেতি করে বলি আপনি বাঁশ কেটে তিন চার হাজার ইটের ভারি ভারি গাড়ি ঢুকালেন রাস্তাটার কি অবস্থা হবে আপনার বিবেক নাই।
সেই ঘটনার বিশ দিন পর আজ মাসিক মিটিংয়ে আমরা তিনজন কাউন্সিলর সাগর, বাদল, ইকবালের সামনে কাউন্সিলর ফারুক এসে আমাকে বলে একটু বাহিরে আসেন। আমি বললাম এখানেই বলেন সে বললো বাহিরে আসেন। বাহিরে বারান্দায় গেলে কাউন্সিলর ফারুক আমাকে বলে নিচে আসেন। আমি সিড়ির কাছে গেলে কাউন্সিলর ফারুক আমার গায়ে হাত তুলে ফেলে। জামার কলার ধরে চড় থাপ্পার মেরে অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজ করে। এক সময় তার সাথে থাকা রিভালভার বের করে। কাউন্সিলর সাগর চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে উনি আমাকে রক্ষা করে। সব কাউন্সিলররা উপরে এসে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়। সে যে ধরণের উগ্র মেজাজ নিয়ে আমাকে মেরেছে তাতে যেকোন একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। সে পরিকল্পিতভাবে লোকজন জড়ো করেছিলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ বলেন, আমরা থাকলে ফারুকের বিষয়টা অন্য রকম হতো। তবে কয়েকজন কাউন্সিলরদের সামনে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে মেয়র তাদের উভয়কে মিলিয়ে দিয়েছে। তবে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর ফারুক হোসেন বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটে নি। যারা বলছে তারা সবাই গুজব ছড়াচ্ছে। আমি এর বেশি কিছু জানি না।
এ ঘটনার সময় কাউন্সিলর, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলো। তবে তারা কোন প্রতিবাদ করেনি।
এদিকে নাসিকের সিও এএফএম এহতেশামূল হক বলেন, সিটি কর্পোরেশনের ভেতরে এমন কোন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। তবে ব্যক্তিগত বিষয়ে কারো সাথে কারো এরকম কোন ঘটনা ঘটলেও এটি সিটি কর্পোরেশনের বিষয় না। এরকম অনেক ঘটনা ঘটে থাকে। যাদের সাথে ঘটেছে তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে হবে।